অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ৬৫ দিনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর সাগরে জেলের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে ফিরছেন জেলেরা। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ দেখা গেলেও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে বলে জানিয়েছে ক্রেতারা।
বুধবার (২ আগস্ট) পাথরঘাটা ঘাটে দেখা গেছে, ঘাটে একের পর এক ট্রলার ভিড়ছে। ট্রলারের খোন্দল (ইলিশ সংরক্ষণের কোটর) থেকে ঝাঁপি বোঝাই করে ইলিশ বিক্রির জন্য অবতরণ কেন্দ্রের পন্টুনে স্তুপ করে রাখছেন ঘাটশ্রমিকেরা।
বিএফডিসি পাথরঘাটা অবতরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে পরবর্তী এক সপ্তাহে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ১০০ টন সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৭০ টনই ইলিশ।
ঘাটে আসা ক্রেতা শফিকুল ইসলাম জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর বেশ ভালোই মাছ পাওয়া যাচ্ছে বলে কিনতে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে ইলিশে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম চাচ্ছে ১২শ থেকে ১৫শ টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম নিচ্ছে ৯শ থেকে এক হাজার টাকা, একটু ছোট ইলিশের দাম চায় কেজিপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। কীভাবে ইলিশ কিনব।
এফবি আল্লাহর দান ট্রলারের মাঝি মনির হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার মধ্যরাতে সাগরে মাছ শিকারে যাই। কিন্তু গভীর সাগরে না গিয়ে মাত্র চার ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে জাল ফেলতে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়েছে ইলিশ। তাও আবার আকারে অনেক বড়। কয়েক ঘণ্টা মাছ শিকারের পর পাঁচ হাজার ইলিশ নিয়ে দ্রুত ঘাটে ফিরেছি।
জেলে আবু হানিফ বলেন, বর্ষা মৌসুম, পানিও বেড়েছে। তাই জালে বড় বড় ইলিশ ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাতে গিয়ে জাল ফেলে তা ট্রলার ভর্তি করে বুধবার (২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে ফিরলাম। ইলিশের ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে।
মৎস্য ব্যবসায়ী আব্দুর ফারুক হোসেন বলেন, জেলেরা ইলিশের অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন। তাই নিরুপায় হয়ে বেশি দামে ইলিশ কিনতে হচ্ছে। এক কেজির বেশি ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ২০ থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকায়। মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায়।
অপর ব্যবসায়ী শুক্কুর বলেন, ইলিশের আলাদা একটা চাহিদা রয়েছে। তাই বাড়তি দামে ইলিশ কিনে দ্রুত তা প্যাকেটজাত করে গাড়িতে তোলা হয়েছে। আশা করি, ভালো একটা দাম পাব।
মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর জোমাদ্দার বলেন, জেলেরা সাগরে থেকে ট্রলারভর্তি ইলিশ নিয়ে অবতরণ কেন্দ্রে ফিরছেন। ইলিশগুলো অনেক বড় বড়। এটা মূলত ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার সুফল বলে মনে করছি।
ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমরা কষ্ট করে নিষেধাজ্ঞা পালন করলেও এখন সুফল ভোগ করছি সবাই মিলে। এ রকম ইলিশ পেলে আমরা ক্ষতি কাটাতে সমর্থ হবো।
Leave a Reply